করোনার মধ্যেই এবার জলপাইগুড়ি শহরে থাবা বসালো ডেঙ্গু। মরশুমের প্রথম ডেঙ্গু রোগীর হদিশ পেয়ে নড়েচড়ে বসলো পৌরসভা। এলাকাকে সেনসেটিভ জোন হিসেবে চিহ্নিত করলো পৌর প্রশাসন।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২৫ নং ওয়ার্ডের বয়েল খানা বাজার সংলগ্ন বস্তি এলাকায় ১২ বছরের এক শিশু পুত্রের দেহে ডেঙ্গুর জীবানু পাওয়া গেছে। একইসাথে ঐ পরিবারের আরও এক শিশু জ্বরে আক্রান্ত। এরা দুজনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাশাপাশি এলাকায় আরও কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর । ঘটনায় এলাকায় ডেঙ্গুর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে ঐ এলাকায় যান পৌর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সৈকত চ্যাটার্জী। আক্রান্তের পরিবারের সাথে দেখা করেন। এরপর এলাকায় থাকা বাড়ির অন্যান্য বাড়িতে গিয়ে পরিবার গুলির সদস্যদের খোঁজ খবর নেন তিনি। একইসাথে ঐ এলাকা সাফাই করার নির্দেশ দিয়ে এলাকায় ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা প্রচার করেন তিনি ।
ঘটনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর দাদু রামচন্দ্র রজক বলেন গত ১২ দিন আগে বাচ্চাটির জ্বর আসে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে ভর্তী করে নেন চিকিৎসক। কয়েকদিন রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর গতকাল তার ডেঙ্গু পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তী করা হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ির আরও একটি বাচ্চার জ্বর এসেছে। তাকেও হাসপাতালে ভর্তী করা হয়েছে। তার রিপোর্ট এখনও আসেনি। আমরা বাচ্চা দুটিকে নিয়ে খুব উদ্বেগের মধ্যে আছি।
ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা লীলা দত্ত বলেন আমরা খুব আতঙ্কিত। আমরা চাই আর যাতে ডেঙ্গু না ছড়ায়। কিন্তু আমাদের এলাকা প্রচন্ড নোংরা। পৌরসভা ঠিকমত কাজ করেনা। এখানে সিটি ভ্যান বাড়ি বাড়ি এসে ময়লা নিয়ে যায়না। ফলে এলাকায় সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই রয়েছে। আমরা চাই পৌরসভা ঠিকমতো পরিসেবা দিক।
ঘটনায় জলপাইগুড়ি পৌর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সৈকত চ্যাটার্জী বলেন জমা জল থেকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েতে পারে। তাই আমরা এই এলাকা সাফাই করার পাশাপাশি এলাকায় মশা মারার তেল স্প্রে করার নির্দেশ দিয়েছি। একইসাথে এই এলাকাকে সেনসেটিভ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হোলো। এর পাশাপাশি শহরে যাতে কোথাও জল না জমে সেই দিকে কড়া নজর দিতে ২৫ ওয়ার্ডের সুপার ভাইজার দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেই এলাকার জলাশয় থেকে জল সরানো সম্ভব নয় সেই জলাশয় গুলিতে কেরোসিন তেল,পোড়া মবিল, মশা মারার তেল ইত্যাদি স্প্রে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলা স্বাস্থ্য শিবির গুলিতে জ্বর, গায়ে ব্যাথা ইত্যাদিতে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যাবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।