বাড়ির চারজনকে খুন করে পুঁতে রাখল ছেলে

প্রতিবেশীদর অজান্তে বাড়ির চার জন বাবা মাম দিদা বোনকে খুন করে মাটির নিচে পুঁতে রাখার অভিযোগ। এই অভিযোগে আসিফ মোহাম্মদ নামে এক যুবক গ্রেফতার করেছে। সন্দেহের তালিকায় রয়েছে তার দাদা। কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকার ঘটনা।এলাকা পরিদর্শনে আসে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। খোঁজ পাওয়া যায় সুরঙ্গের।পুলিশ সুপার ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহ মাটি খুড়ে উদ্ধার করে। তবে কি কারনে এই সুরঙ্গ তারও তদন্তে পুলিশ। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম আলেক নুর বেওয়া(৭২),ইরা বিবি (৩৬), রিমা খাতুন (১৬)জাওয়াদ আলি (৫৩)। স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান,মহাম্মদ আসিফ ওরুফে হান্নান বলে এলাকায় পরিচিত। সে স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এরপর থেকে সে বাড়িতেই থাকতো। এমনকি তার বাড়িতে কাউকেই প্রবেশ করতে দিতো না। তার এক দাদা রয়েছেন। তাকেও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে ভয়ে চারমাস পালিয়ে বাইরে থাকত। স্বাভাবিক ভাবেই সে ও তার পরিবারের চার সদস্য নিয়ে এই বাড়ির মধ্যেই থাকতেন। স্থানীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বড় দাদার যোগাযোগ থাকলেও ছোট ভাইয়ের কোন যোগাযোগ ছিল না। প্রতিবেশীদের বাড়িতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ ছিল। কোন কাজে বাড়িতে আসলে তাদেরকে বাইরে থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হত। সহি ভাবে তাদের সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপরই শুক্রবার তার দাদা বাড়িতে ফিরে আসে। সমস্ত ঘটনা জানতে পারে প্রতিবেশীরা জানতে পারে যে চারজনকে সে বাড়ির ঘরের মধ্যে পুঁতে রেখেছে। ঘটনার খবর পেয়ে কালিয়াচক থানার পুলিশ এসে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। আরো জানা গিয়েছে আসিফের বাবার প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। মাঝে মাঝে তার বাবার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে সে খরচ করত। তবে কি উদ্দেশ্যে খরচ করা হচ্ছে সেটা কখনই তাদেরকে বলতো না। এখনো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়নি বেলা গড়ালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেই মৃতদেহগুলি উদ্ধারের কাজ করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য রয়েছে। অভিযুক্ত ছিলেন কে গ্রেপ্তার করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।আড়ও জানা গিয়েছে মহন্মদ আসিফ একজন বড় হ্যাকার। তিনি বিভিন্ন ভাবে হ্যাক করে টাকা উপার্জন করেন। তার অরও টাকার প্রয়োজন হওয়ায় এই চারজনকেখুন করেন।
যদিও ধৃতের কাকা নৌসাদ মহন্মদ জানান,ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন কমপিউটার কিনেছিল। সে জানিয়েছিল সে একটি অ্যাপ তৈরী করছে। সেই কারনে টাকার দরকার। সেই কারনে সে বাবার সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখে দেয়। এরপর থেকে বাড়ির বাইর বের হত না। এদিন তার দাদার কাছ থেকে সম্তস ঘটনা জানতে পায়।
, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, তিনি বলেন, কি করে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো তা বুঝতে পারছি না এই নিয়ে আমি প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে কি ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা আমরা পুলিশকে বলব কিন্তু সঠিক তদন্ত করতে।
এদিকে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে অভিযুক্তের বাড়ি থেকে চারটি ল্যাপটপ, ছয়টি সিসি ক্যামেরা, বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস, গ্রাজেট সহ নানান সামগ্রী উদ্ধার করেছে। বাড়ির মধ্যে একটি সুরঙ্গ দেখে চক্ষুচড়কগাছ হয়ে গেছে পুলিশ কর্তাদের বিলাসবহুল বাড়ির গোডাউন ঘরে ওই চারজনের দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওই চারজনের দেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় তদন্তে কলকাতা থেকে আসছে ফরেনসিক টিম। 
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন,  ঠান্ডা পানীয়ের মধ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ওই চারজনকে প্রথমে খাওয়ানো হয়। তারপরেই জলে ডুবিয়ে ওই চার জনকে খুন করে অভিযুক্ত আসিফ মহাম্মদ। এরপর তাদের মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। ধৃতের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই চারজনকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে বেহুশ করে পরিবারের ছোট ছেলে আসিফ মহম্মদ বলে অভিযোগ । এরপর তাদের অচৈতন্য অবস্থায় হাত, পা বেঁধে বাড়ি ভেতরে গোডাউনের ভেতর দেওয়াল খুঁড়ে ঢোকায়। এরপর মাটিতে পুঁতে দিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার বিষয়টি জানতে পারে বড় ছেলে রাহুল শেখ। কিন্তু অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদ তার দাদাকেও খুনের হুমকি দেয়। সেই ভয়েই নাকি রাহুল শেখ কলকাতায় পালিয়ে আত্মগোপন করে। সম্প্রতি আসিফ মহম্মদ তার বাবার কিছু সম্পত্তি এবং বাড়ি বিক্রি করার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছিল। এনিয়ে তার কাকা এবং বড় ভাই রাহুল শেখকে ফোন করে । আর তখনই রাহুল শেখ তার কাকাকে পরিবারের চার সদস্যের খুনের বিষয়টি জানিয়ে দেয়।আরও জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অনেক কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেন বাড়ির বড় ছেলে রাহুল শেখ বিষয়টি জানার পর এতদিন চুপচাপ ছিল সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তকে জেরা করার ক্ষেত্রেও পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন আদালতে জানানো হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *